আজ শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
আজ শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও এগ্রো প্রসেসিংয়ে বিনিয়োগের আহ্বান

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও এগ্রো প্রসেসিংয়ে বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার বিকেলে কৃষিখাতে ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে দুদেশের ডিজিটাল কনফারেন্সে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) যৌথভাবে এফবিসিসিআই অডিটরিয়ামে এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে যাচ্ছে। সরকার এ বছর ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদের কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপারসহ কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। এছাড়াও ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে যার মাধ্যমে প্রায় ৫১ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি দেয়া হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার বছরে প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলারের, যা বছরে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এ বিশাল বাজারে ভারত যদি সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিনিয়োগে করে তবে দুদেশই উপকৃত হবে। বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা স্থাপন ও অ্যাসেম্বল হলে দেশে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে অন্যদিকে কৃষকেরা কম দামে যন্ত্রপাতি কিনতে পারবে।

ড. রাজ্জাক বলেন, আমরা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে ভারতের সহযোগিতা দেখতে চাই। ভারতীয় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট স্থাপন করতে পারে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দু’দেশেই ৬০ শতাংশ এর বেশি মানুষ কৃষিতে সম্পৃক্ত। ভারত বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, ফুড প্রসেসিং ও ফিস-অ্যাকুয়াকালচার এই তিনটি খাতে অধিক গুরুত্বসহ কৃষির সব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও সহযোগিতা করতে আগ্রহী। ফুড প্রসেসিংয়ে একসঙ্গে কাজ করলে বৈশ্বিক ফুডবাজার এই দুদেশের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও তিনি আশা করেন।

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার উল্লেখ করে পীযূষ গয়াল বলেন, এ অংশীদারিত্ব অন্যদের জন্য রোল মডেল। আমি মনে করি, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে কৃষির গেম চেঞ্জিং সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কৃষিখাতে জিটুজি এবং বিটুবি সহযোগিতা ও বিনিয়োগের খাত চিহ্নিতকরণে এই কনফারেন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশি রফতানি পণ্যের ওপর আরোপিত এন্টি ডাম্পিং শুল্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এসব পদক্ষেপের কারণে আমাদের রফতানি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই’র সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাত প্রতিবছর ভারত থেকে কয়েক শত কোটি ডলার পণ্য আনে, যা আরো বৃদ্ধির ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। এটা যৌথ উদ্যোগ, শিল্প বৈচিত্র্যকরণ এবং বাজার বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে যেকোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারি।

অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, টাটা স্টিলের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক টি ভি নরেন্দ্রন, মাহিন্দ্র ও মাহিন্দ্র’র সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পবন গোয়েঙ্কা, সিআইআই’র মহাপরিচালক চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক সুজিব রঞ্জন দাশ বক্তব্য রাখেন। এ সময় কৃষিসচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দুদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin