পরম করুণাময় সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ (swt) যেমনি মহাপবিত্র তেমনি তিনি কেবল পবিত্র জিনিসিই কবুল বা গ্রহণ করে থাকেন । তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। ইসলাম যেরূপ পবিত্র ধর্ম তেমনি পবিত্র বিশ্বাস এবং কর্মই ইবাদত হিসেবে গণ্য। সে কারণেই আমরা প্রতিদিনের সালাতে রুকু এবং সিজদায় ( সুবহানা রাব্বিয়েল আজিম এবং সুবহানা রাব্বিয়েল আ’লা বলে ) আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য বার বার তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে থাকি।
নবী-রাসুলগণ পৃথিবীর শ্রেষ্ট মানুষ এবং নিষ্পাপ থাকা স্বত্বেও আল্লাহ্ (swt) পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘ হে রাসুলগণ ! তোমরা হালাল পবিত্র বস্তু হতে আহার গ্রহণ কর এবং সৎকাজ কর। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত। ( সুরা-২৩ মু’মিনুন, আয়াত- ৫১। অতঃপর আল্লাহ্ (swt) সকল বিশ্ববাসীর উদ্দ্যেশ্যে বলেন, ‘ হে মুমিনগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু সামাগ্রী গ্রহণ করো, যা আমি তোমাদের রুযী হিসেবে দিয়েছি এবং শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর, যদি তোমরা তাঁরই বন্দেগী কর ।’ ( সুরা-২ বাঁকারা, আয়াত-১৭২।
আবার হালাল উপায়ে অর্জিত সম্পদকেও প্রতিবছর হিসাব করে জাকাত প্রদানের মাধ্যমে পবিত্র করতে হয়। সঠিকভাবে জাকাত আদায় না করলে বৈধভাবে উপার্জিত সম্পদও হারাম হয়ে যায়। আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জাকাত না দিয়ে বরং দুনিয়ায় কিছু নাম, যশ, খ্যাতি অর্জণের লক্ষ্যে গরীব, মিসকিন বা অসহায়দের কিছু দান,খয়রাত বা সহায়তা করে নিজেকে খুব পরহেজগার,দাতা এবং মানবদরদী বিবেচনা করে তৃপ্তির ঢেকুর গুণতে থাকি। আল্লাহর হুকুম-আহকামের আওতায় এগুলো মোটেই সমীচীন নয়। অজু-গোসল বা পবিত্রতা ছাড়া যেমন নামাজ শুদ্ধ হয় না, ঠিক একইভাবে হালাল জীবিকা ছাড়া কোনো ইবাদতই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না।
আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধিতে অনুধাবন করতে পেরেছি যে, ইমান এর পরেই নামাজের অবস্থান। সেই নামাজের মধ্যে যে বিষয়গুলো অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করা হয়েছে যেমন- শরীর পাক,কাপড় পাক, জায়গা পাক,সহিহ্ নিয়ত ইত্যাদি। আমাদের শরীর তথা রক্ত,মাংস,কাপড়-চোপড় ইত্যাদিতেই যদি পবিত্রতা বা শুদ্ধতা না থাকে তাহলে সহিহ্ নিয়ত বা নামাজে খুঁশু খুঁজু কীভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে ?
আবার হারাম বস্তু হালাল পন্থায় অর্জন করলেও তা যেমন হালাল হবেনা, অনুরূপ হালাল বস্তু হারাম পন্থায় লাভ করলেও তা বৈধ বা হালাল হবেনা। যেমন মুসলমানদের জন্য শুকুর এর মাংস হারাম।তাই হালাল উপার্জন দ্বারা শুকুর কিনে বিসমিল্লাহ বলে জবাই করা হলেই তা হালাল হবেনা। আবার গরু,মহিষ, ভেড়া ইত্যাদির মাংস হালাল হলেও সেগুলো যদি হারাম অর্থ দিয়ে ক্রয় করা হয় বা হালাল অর্থ দিয়ে ক্রয় করেও তা যদি জ্ঞাতসারে বিসমিল্লাহ বলে আল্লাহর নামে জবাই না করা হয় তাহলে তা হারাম বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ্ (swt) আমাদের সঠিক বুঝ এবং যথাযথ আমল করার তৌফিক দান করুণ। আমীন।
লেখক: শেখ মুজিবুর রহমান এনডিসি, অবসরপ্রাপ্ত সচিব