মানবতা যখন মরাণাপন্ন, গোটা পৃথিবী যখন জাহেলিয়াত ও বর্বরতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, মারামারি-হানাহানি ও হত্যাযজ্ঞ যখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছিল ঠিক তখনই আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে ওহি ও রিসালাত দিয়ে প্রেরণ করেন মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। তার আগমনে বিশ^বাসী মুক্তির পথ খুঁজে পেল। তিনি প্রদীপ্ত প্রদীপ হয়ে অন্ধাকারচ্ছন্ন এ জগতকে আলোকিত করলেন। দিশেহারা জাতিকে হেদায়েত ও মুক্তির পথ দেখালেন। মানুষের গোলামী থেকে মুক্ত করে আল্লাহর গোলামীতে ন্যস্ত করলেন। জান্নাতের সুখ-শান্তি ও জাহান্নামের ভয়ভীতির বাণী শোনালেন। সৎ কাজের আদেশ ও উৎসাহ এবং অসৎ কাজে নিষেধ ও নিবৃত্তকরণের তালিম দিলেন। বিপদাপদ ও দুঃখ-কষ্টে ধৈর্যধারণ, ক্ষমাশীলতা ও আত্মসংযমের দীক্ষা দিলেন। আর এভাবেই অধঃপতনের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত এক জাতি উত্তরণে আলোকিত পথের সন্ধান পায় এবং পরবর্তীদের জন্য অনুসরণীয় ও বরণীয় জাতিতে পরিণত হয়।
অধঃপতিত এ জাতিকে উন্নতির শিখরে নিতে অনেক কষ্ট-ক্লেশ ও চেষ্টা-সাধনা করতে হয়েছে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। কণ্টকাকীর্ণ ও বিপদসংকুল সুদীর্ঘ পথ তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে। শিকার হতে হয়েছে অপমান-লাঞ্ছনা, অপদস্ত ও সামাজিক বয়কটের। অতি আপনজন ও মাতৃভূমি ছেড়ে অচেনা দেশে পাড়ি দিতে হয়েছে। রাতের ঘুম হারাম করে, শরীরের ঘাম ও রক্ত ঝরিয়ে ইসলাম নামক এ দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উপরন্তু তিনি চাইলে- অনায়াশে আরাম-আয়েশের রাজকীয় এক জীবন উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নেন দুঃখ-কষ্ট, আত্মত্যাগ, সাধনা ও সংগ্রামের জীবন। শত বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূলতার পরও তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালনে মুহূর্তের জন্যেও কিঞ্চিৎ বিচলিত ও কুণ্ঠিত হননি। তাবৎ শিরক-কুফুর ও তাগুতের সামনে মাথা নত করেননি। কারো হুমকি-ধমকি ও রক্তচক্ষুকে পরওয়া করেননি। উম্মাহচিন্তায় সর্বদা তিনি বিষণœ ও বিভোর থাকতেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশা ও দুর্দিনে তিনিও চিন্তিত ও অস্থির হয়ে পড়তেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(হে নবী,) তারা ইমান আনে না, এই মর্মব্যথায় নিজেকে শেষ করে দিবেন।’ (সুরা শুআরা : ০৩)।

| Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat | Sun |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | |||||
| 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 |
| 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 |
| 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 |
| 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 |




