আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানসহ সবাই খালাস: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা

 

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে হাইকোর্টের ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পেলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এছাড়া আপিল করতে না পারলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি সর্বসম্মতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন।

রায়ে আদালত বলেছেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছিল।রায়ের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, সর্ব্বোচ আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, “হাইকোর্ট বিভাগ এ মামলায় খালেদা জিয়াকে যে সাজা দিয়েছেন তাতে আইনের মারাত্মক ব্যত্যয় হয়েছে। শুধু তাই নয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের যে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে সেই অর্থও সুরক্ষিত আছে সেই অ্যাকাউন্টে তা সুরক্ষিত আছে। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই এ রায় দেওয়া হয়।”

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি চার কার্যদিবসে শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়।

গত ৭ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু হয়।

গত বছরের ১১ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেওয়া ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেন আদালত। পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে আপিলের সারসংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

গত সোমবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ৩ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত।

এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অরফানেজ ট্রাস্টের নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান।

একইসঙ্গে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ মামলার অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামির প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।

 

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin