আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সড়ক অবরোধ-আলটিমেটাম

 

উন্নত চিকিৎসার দাবি নিয়ে ফের আন্দোলনে নামা গণঅভ্যুত্থানে আহতরা শ্যামলীর শিশুমেলা মোড় অবরোধ করেছেন। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতালের) সামনে থেকে সরে গিয়ে তারা ওই মোড়ে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।

তাতে মিরপুর রোডের উভয় দিকের পাশাপাশি শ্যামলী থেকে আগারগাঁও সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মিরপুর রোডের দুই পাশেই বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যরা আসাদগেট থেকে গাবতলী-মিরপুরগামী যানবাহনগুলোকে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে ঘুরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

 

 

সড়কে অবস্থান নেওয়া নাঈম শেখ নামে একজন বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত আশ্বাস পেয়েছি, কিন্তু কোনো আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। গতকাল রাতে রাস্তায় নামছি, কিন্তু এখনও আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। দাবি পূরণের ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের আন্দোলনকে আরও জোরদারের জন্য আমরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে এসে শিশুমেলায় অবস্থান নিয়েছি। এখানে আমরা অবস্থান করে দেখব, এতেও কাজ না হলে সচিবালয় অভিমুখে রওনা দিয়ে গিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করব।’

 

ডিএমপির শেরেবাংলা নগর ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার উদয় কুমার সাহা বলেন, ‘আগারগাঁও থেকে শ্যামলী ও শিশুমেলাগামী ছোট গাড়িগুলো ৬০ ফিট দিয়ে ঘুরিয়ে দিচ্ছি, আর বড় গাড়িগুলো পাসপোর্ট অফিসের সামনে দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যেহেতু এখন শিশুমেলায় মিরপুরের মেইন রোড বন্ধ করে দিয়েছে, এখন ইনকামিং গাড়িগুলো আসা সম্ভব হচ্ছে না।’

 

ক্ষোভ ঝেড়ে আন্দোলনকারী মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘রাস্তা অবরোধ করে দেওয়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার রাস্তা বন্ধ করতে আমাদের বাধ্য করেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা কী করছে, কী খাচ্ছে, কোথায় থাকছে- সেই খবর কেউ নিচ্ছে না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা বুঝে গেছে সব শালারা বাটপার।’

 

 

শরীফ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই আন্দোলন গতবারের আন্দোলনের মতো নয়। হাসিনার বন্দুকের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলাম। অন্ধ হয়ে গেছি, খোঁড়া হয়ে গেছি, ভয় করি নাই। যদি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের সঙ্গে বেঈমানি করা হয়, হাসিনা গেছে যে পথে তারাও যাবে সেই পথে।’

 

উন্নত চিকিৎসার দাবি জানালেও এ বিষয়ে কেউ ‘গুরুত্ব দিচ্ছেন না’ অভিযোগ করে শনিবার রাত ১০টার পর সড়কে নেমে আসেন পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন থাকা আহতরা।

 

রোববার সকালে তাদেরকে পঙ্গু হাসপাতালের দুই পাশে রাস্তার উপর বেঞ্চ, চেয়ার ও বাঁশ ফেলে আটকে রাখতে দেখা গেছে। আহতদের কেউ কেউ সড়কে বিছানা পেতে শুয়ে পড়েন। তাতে শিশু মেলা থেকে আগারগাঁও ট্রাফিক সিগন্যাল পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা শিশু মেলা মোড়ে অবস্থান নিলে মিরপুরে রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

 

আন্দোলনকারীদের নেতা কোরবান শেখ হিল্লোল শনিবার রাতে বলেন, ‘আজকে বিদেশি ডাক্তার এসেছিল। তারা আমাদের পরীক্ষা করে একটা মতামত দিয়েছে। আমাদের মধ্যে যাদের বিদেশ পাঠানো হয়েছে, তাদের আর আমাদের শারীরিক অবস্থা একই বলে ডাক্তারদের মতামতে উঠে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ কারণে আবার পথে নেমেছি।’ হিল্লাল বলেন, ‘আমাদের কথা কেউ শুনছে না। আমাদের ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন।’

 

উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এর আগে নভেম্বরে সড়ক অবরোধ করেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। সরকার ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে তাদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি চিকিৎসার বিষয়টিও দেখভাল করা হচ্ছে। তবে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের অভিযোগ, তারা ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সহায়তাও পেয়েছেন ‘সামান্য’।

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin