আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
আজ মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের

 

 

হাসিনা সরকারের আমলে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কার কঠিন বলে মনে করে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ক’ঘণ্টা আগে রিলিজ হওয়া বাৎসরিক রিপোর্টে বলা হয়, শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহার রোধই নয়, নিরাপত্তা বাহিনী যাতে পরবর্তী সরকারের দমন–পীড়নের হাতিয়ার না হয়, তা নিশ্চিত করতে এখনই র‍্যাবের বিলুপ্তি ঘটানো জরুরি।

 

নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) রিপোর্টে খোলাসা করেই বলা হয়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের কাঠামোগত সংস্কার না হলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কষ্টার্জিত সব অর্জন বৃথা যেতে পারে! রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো পতিত সরকারের আমলে সাধারণ মানুষকে যেভাবে অকারণে হয়রানি করতো এখনও তাতে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। সেই বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করা বিদ্যমান আপৎকালীন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করা হয়।

সব আমলেই ্যাবদায়মুক্তিপেয়েছে

২০০৪ সালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) গঠন করা হয়েছিল। এরপর যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা এই বাহিনীকে এক ধরনের ‘দায়মুক্তি’ দিয়ে কাজ করিয়েছে।  র‍্যাবের এক কর্মকর্তা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেন, গুম, হত্যা বা ক্রসফায়ারের ঘটনার জন্য র‍্যাবের একটি আলাদা দল রয়েছে। বেশির ভাগ কাজই ওই দল করে। র‍্যাবে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে তিনি র‍্যাবে যোগ দিয়ে হতবাক হয়েছিলেন। কারণ, একজন প্রশিক্ষক প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে, তিনি ১৬৯টি ক্রসফায়ার পরিচালনা করেছেন।

রাজনৈতিক নেতারা যখনই ক্ষমতার বাইরে থাকেন, তখন র‍্যাবের বিলুপ্তির বিষয়ে একমত পোষণ করেন। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মার্কিন সরকার র‍্যাবের পাশাপাশি বাহিনীর সাতজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

গুম–সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তাদের প্রতিবেদনে র‍্যাবকে বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে। র‍্যাবপ্রধান এ কে এম শহীদুর রহমান ইউনিটের গোপন আটক কেন্দ্রের কথা স্বীকার করেন এবং বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইউনিটটি বিলুপ্তি করে দিতে চাইলে র‍্যাব তা মেনে নেবে।

এমন প্রেক্ষাপটে এইচআরডব্লিউ জাতিসংঘ এবং দাতা সরকারকে সুপারিশ করে বলেছে, র‍্যাব বিলুপ্তি করা হবে শুধু এই শর্তেই যে,  র‍্যাবের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা যাতে অন্য ইউনিটে গিয়ে একই অপকর্মের চর্চা করতে না পারেন, সে জন্য তাদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

কাঠামোগত সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে এইচআরডব্লিউ’র জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাধীন করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। তাদের পদোন্নতি থেকে শুরু করে নিয়োগ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। তার মতে, যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, র‍্যাবকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। র‍্যাবকে সংস্কার করা সম্ভব নয়।

 

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin