আজ বুধবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
আজ বুধবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সাধু-চোরের দোস্তির ইতিবৃত্ত, ধর্মের নামে ভন্ডামী!

গনতন্ত্র ও মাবাধিকারের ফেরিওয়ালা খ্যাত পশ্চিমা বন্ধুরা মাত্র ক’মাস আগেও জামায়াত ইসলামীর নাম ভুল করেও মুখে নিতেন না। এখন যেমন তারা নির্বাচনের নাম মুখে আনছেন না। সেই তারাই এখন ধারাবাহিক বৈঠক করছেন জামায়াতের সঙ্গে। একই পথে হাটছে এশিয়ার জায়ান্ট খ্যাত চীন-জাপানও।
এদিকে ইউনুস সরকারের ভেতরে-বাইরে প্রাধান্য বিস্তার করে চলেছে জামায়াত-শিবির। শুধু তাই নয়। ২৪ এর মুক্তিযোদ্ধা খ্যাত ছাত্র-সমন্বয়ক আর ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতাকারী জামায়াত-শিবির সর্বত্র মিলেমিশে একাকার।
তাই সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে। তবে কি ২৪ এর মুক্তিযোদ্ধা আর ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর মুঠোয় বন্দি হতে চলেছে ক্ষমতার মসনদ?
আমার অনুসন্ধান বলছে, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে একটি পরাধীন ও দুর্বলতম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতি আর ভারত বিরোধিতাকে পুঁজি করে মরণ খেলায় মেতে ওঠেছে চক্রটি।একদিকে তারা ভারত বিরোধীতা করছে অন্যদিকে ভারতীয় নায়িকার রুপ-সৌন্দর্যকে মা হাওয়া আলাইহে ওয়াসাল্লামের সঙ্গে তুলনা করছে.. নাউযুবিল্লাহ।
ইসলামী সন্মেলনের অবয়বে সারা দেশে চলছে জামায়াতের বন্দনা যা ধর্মীয় চেতনার পরিপন্থী। এবং নির্বাচনি আইনের সুস্পষ্ঠ লঙ্গন।
মুখে মুখে তারা পবিত্র কোরআন ও ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলছে অন্যদিকে আল্লাহর ওলী (আমীর হামজার ভাষায়)নারী পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলছে! যা সম্পূর্ণরুপে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী।
গেল দুর্গাপূঁজায় চট্টগ্রামের একটি মন্ডপে নাচ-গান করেছে জামাত-শিবির ! আর যশোরের একটি মন্ডপে মন্ত্র পাঠ করেছে জামায়াত নেতা ! আমাদের শ্রেষ্ঠতম ধর্ম ইসলামের নামে এমন ভন্ডামীর শেষ কোথায়?
আমার ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র-সম্বয়কদের বলবো, ফ্যসিস্ট হাসিনার পতনে আপনাদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু আপনাদের বর্তমান কর্মকান্ডে মানুষ ত্যাক্ত-বিরক্ত উদ্বিগ্ন। মনে হচ্ছে, মায়াবী কোনো পথে পা বাড়িয়েছেন আপনারা। সেই পথের শেষ কোথায় জানেনতো? বন্ধুরা মনে রাখবেন, ক্ষমতার দাপটে অন্যকে ঘৃণা করে, ভয় দেখিয়ে বেশী দিন টিকে থাকা যায় না। তাহলে হাসিনার সঙ্গে আপনাদের পার্থক্য কোথায়? কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। তাই বলব, বন্ধুরা,সময় ফুরিয়ে যাবার আগেই মানুষের কথা ভাবুন-দেশের কথা ভাবুন। কারণ আপনাদের ঝুলিতে থাকা সকল যাদু গত ৫ মাসেই মানষের দেখা হয়ে গেছে।
পাঠক, আপনাদের স্মৃতিকে একটু নাড়া দিতে চাই। স্মরণ করতে পারেন। ২০২৩ সালে মার্কিন প্রশাসনের যত শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশে এসেছেন। গত ৫২ বছরের ইতিহাসে তা দেখা য়ায়নি।
অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড লজিস্টিক এগ্রিমেন্ট (আকসা)। জেনারেল সিকিউরিটি অফ মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিসমিয়া) এবং আইপিএস বা ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি। ২৪ এর নির্বাচনকে টার্গেট করে এসব চুক্তি সইয়ে হাসিনার ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ভারতের সায় না থাকায় সময় ক্ষেপনের কৌশল নেয় হাসিনা। এজন্য নির্বচনের আগে গণতন্ত্র-মানবাধিকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ভিসা নীতি প্রণয়নের আড়ালে মূলত হাসিনা সরকারকে বাধ্য করে চুক্তিগুলো সম্পন্ন করার প্রয়াস নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ।
পাঠক আরো স্মরণ করতে পারেন, পতিত খুনি-স্বৈরাচার হাসিনা বলেছিলেন ‘সাদা চামরার এক ব্যক্তি আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল সেন্ট মার্টিন দিয়ে দেয়ার জন্য যাতে তারা ঘাঁটি করতে পারেন।’ ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন,‘পিটার হাসের মুরব্বীদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া হয়ে গেছে। দিল্লী আছে আমরা আছি। ঢাকা আছে দিল্লী আছে।
আমাকে বলতেই হবে যে, সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে হাসিনা এবং কাদেরের এটিই ছিল একমাত্র নিখাদ-নির্জ¦লা সত্য ভাষণ। কিন্তু বাঘ-রাখালের গল্পের মতো আমরা তা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। কারণ হাসিনার শাসনামলটি প্রতিষ্ঠিত ছিল অসংখ্য মিথ্যা আর অসত্যের ওপর।
নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে শেখ হাসিনা নির্বাচনের পর চুক্তিসমূহ সই করার প্রতিশ্রæতি দেন। এতে আশ্বস্ত হয় বাইডেন প্রশাসন। এর ফলে আমেরিকা নির্বাচন প্রশ্নে কার্যত দৃশ্যের অন্তরালে চলে যায়। ২৮ অক্টোবর বিএনপির ওপর চালানো হয় ইতিহাসের নৃশংসতম ক্র্যাকডাউন। হাসিনার পুত্র জয় হঠাৎ করেই ৬ দিনের জন্য বাংলাদেশে আসার সুযোগ পান। সাজানো নির্বাচনে আবারো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন হাসিনা। কিন্ত হাসিনা আমেরিকাকে দেয়া কথা রাখেনি ।
আমেরিকার একটি গবেষণা সংস্থা ‘ড্রাস ডট ইন’ যারা সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা ও অধ্যয়ন করেন। সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়ে যে, দু’শ বছরের ইতিহাসে আমেরিকা বিশ্বের ৬৪টি দেশের রেজিম পরিবর্তন করেছে। যেখানে বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
ভু-রাজনীতির বৃহত্তর স্বার্থে চীন সাগর ও বঙ্গোপসারের নিয়ন্ত্রণই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এছাড়া পার্বত্য বান্দরবান এবং ভারতের মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড নিয়ে একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজে তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
ফলে বহুল আলোচিত চুক্তিসমূহে যেসব শর্তাদি রয়েছে, এতে করে আমেরিকার সুদূর প্রসারী ও বহুমুখী স্বার্থ থাকলেও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য তা ভাগ্য বিপর্যয় ডেকে আনবেই আনবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে উল্লেখিত চুক্তিসমূহের জন্য মার্কিনীরা যে অর্থ-সময় ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করেছে। তার সুফল ঘরে না তুলে তারা বাংলাদেশের পিছু ছাড়বে না কিছুতেই। এজন্য তারা সম্ভাব্য সবকিছুই করছে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে তারা জনপ্রিয় বড় কোনো দলের ওপর অস্থা রেখে আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না। ফলে আগামী নির্বাচনে বিকল্প কোনো শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকদের ওপর ভর করেছে মার্কিনীরা। আর এ কাজে তারা দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত এবং অনুগত ড.ইউনুসকেই বেছে নিয়েছে।
প্রিয় পাঠক, এখন দেখে নেয়া যাক। পশ্চিমাদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ইসলাম ও ধর্ম ব্যবসায়ী-বিদ্বেষী চক্র ক্ষমতায় বসে গেলে কী ঘটতে পারে দেশের ভাগ্যে ।
এশিয়া এবং আফ্রিকার যেসব মুসলিম দেশে মার্কিনীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। সেসব দেশের মানুষের চরম ভাগ্য বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। তবুও তারা একরকম টিকে আছে। কারণ রপ্তানীযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের পাশাপাশি জনসংখ্যার তুলনায় তাদের দেশ অনেক বড়। যেমন ইরাক,আফগানিস্তান, সিরিয়া,লিবিয়া এবং মিশর। এই ৫ টি দেশের মোট আয়তন প্রায় ৪৬ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। আর জনসংখ্যা মাত্র ২১ কোটির কিছু বেশী। অর্থাৎ প্রতি ২ লক্ষ বর্গ কিলোমিটারে বাস করে ৫০ লাখেরো কম মানুষ।
অপরদিকে মাত্র ১ লক্ষ ৪৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারের বাংলাদেশে প্রায় ২০ কোটি মানুষের বসবাস। পোশাক রপ্তানী আর প্রবাসী আয়ই আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।
সুতরাং আমেরিকা যদি চুক্তির মাধ্যমে এখানে পা রাখার একটুও সুযোগ পায় তবে চীন এবং ভারতের সরাসরি স্বার্থহানি ঘটবে। কে না জানে? স্বার্থের দ্ব›দ্ব সবাইকে অন্ধ করে দেয়। ফলে ত্রিমুখী দ্বন্ধের কবল থেকে মুক্তির কোনো উপায় থাকবে না বাংলাদেশের। ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে নিয়োগ করবে সর্বশক্তি।
এদিকে ইউনুস সরকার ইতোমধ্যে পাকিস্তানীদেরকে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বা নিরাপত্তা পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। যা বাংলাদেশের কোনো সরকার গত ৫৩ বছরেও দেয়নি। ভারত এ সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। যেখানে সেখানে বোমা ফুটিয়ে দোষ চাপাবে পাকিস্তানের ওপর। যেমনটি তারা করেছিল বিএনপি-জামাত জোট সরকারামলে। এভাবেই তারা তাদের জঙ্গিবাদের বয়ানকে প্রতিষ্ঠিত করে হাত বাড়াবে চূড়ান্ত আগ্রাসনের দিকে। অপরদিকে চীন মিয়ানমারকে দিয়ে কক্সবাজার সীমান্তে চলমান উৎপীড়ন বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ। ফলশ্রæতিতে অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ।
এর ফলে পোশাক উপাদন ও রপ্তানী খাতে নেমে আসবে ভয়াবহ ধ্বস। টান পড়বে প্রবাসী আয়ে। দ্রæত ভেঙ্গে পড়বে প্রবাহমান অর্থনীতির চাকা। বেকার হয়ে পড়বে লক্ষ লক্ষ মানুষ। বিপন্ন হবে লক্ষ-কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা।
এখন দেশবাসীকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা কি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী ধর্ম ব্যবসায়ীদের সুন্দর সুন্দর কথার যাদুতে মোহাবিষ্ট হয়ে ফিলিস্তিনী ও সিরিয়ার মতো স্মরণার্থীর জীবন বেছে নেবেন। নাকি ইসলামের সৌন্দর্যকে মাথার মুকুট করে সব ধর্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাবেন সমৃদ্ধির পথে?
প্রিয় পাঠক ধর্মের লেবাসধারীদের ইসলামী চেতনা বিরোধী আচরণ ও কথাবার্তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে উল্লেখ আছে যে,অনেক নামাজী হাজী-গাজী,মুফতি- মোহাদ্দিস জাহান্নামী হবেন, শুধুমাত্র বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য।
অপর দিকে সুরা বাকারার-৬২ নম্বর আয়াতে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেন,‘নিশ্চয়ই মুসলমান,ইহুদি, খ্রিষ্টান ও সাবেয়ীদের মধ্যে যারাই অল্লাহর মহাবিচার দিবসে বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে তাদের সবার জন্যই পুরষ্কার রয়েছে প্রতিপালকের নিকট। তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃিখিতও হবে না।
পাঠক, স্মরণ করতে পারেন, ২০০৭ সালের ১/১১’র সরকারামলে ড. ইউনুস নাগরিক শক্তি গঠনের ঘোষণা দিয়েও জনসর্মথনের অভাবে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিলেন। সে সময় তিনি এ দেশের রাজনীতিবিদদের কঠোর ভাষায় সমালোচনা করতেন। যা এখনো তার সহকর্মী উপদেষ্টা ও নিয়োগ কর্তা খ্যাত ছাত্র-সমন্বয়করা অব্যাহত রেখেছেন।
গেল সপ্তাহে জামাতের আমীর বলেছেন, ‘দেশে পরীক্ষিত দুটি দেশপ্রেমিক শক্তি আছে। এর একটা সেনাবাহিনী আরেকটা জামায়াতে ইসলামী’। প্রশ্ন হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতাকারী জামায়াতের এতো বড় সাহসের উৎস কোথায়? সেনাবাহিনী কি তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত? না হলে আমাদের গর্বের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার এই নগ্ন অপপ্রয়াস কেন? আমি জানতে চাই। জবাব দেবেন কি সেনাপ্রধান?
সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনার মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ছুটে এসেছিলেন ঢাকায়। নতুন সম্পর্কোন্নয়নে প্রতিবেশীর এই আগ্রহকে ইউনুস সরকার তেমন গুরুত্ব দেয়নি বলেই মনে হচ্ছে। দপ্তর বিহীন উপদেষ্টার ফেসবুক স্ট্যাটাসই তার বড় প্রমাণ। কারণ ভারতের সঙ্গে সমস্যা জিইয়ে রাখলেই সরকারের বেশী লাভ।
সম্মানিত পাঠক, লক্ষ্য করুন এই সরকার অভ্যুত্থানের ফসল হলেও হতাহত এবং তাদের স্বজনরা এখনো দুঃখে-কষ্টে দিনাতিপাত করছে। জিনিস-পত্রের দাম কমার বদলে বেড়েই চলেছে। আপনার-আমার জীবনযাত্রা সহজ হওয়ার পরিবর্তে আরো কঠিন হয়েছে। এর কারণ একটাই। সরকারের সমস্ত মনোযোগ কাগুজে সংস্কারের ওপর। প্রভুদের স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের একমাত্র এজেন্ডা। গণতান্ত্রিক উত্তরণ তথা নির্বাচনমুখী মানুষের মনযোগ এড়াতেই এই নাটক। গত ৫৩ বছরে বহু কিছিমের সংস্কার নাটক আমরা দেখেছি। প্রকৃত পক্ষে আমাদের দরকার মগজের সংস্কার।
আপনার আমার সমস্যা নিয়ে সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সার্বিক প্রেক্ষাপটে এ কথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, কার্যত এটি যুক্তরাষ্ট্র তথা পশ্চিমাদের আশির্বাদপুষ্ট একটি পুতুল সরকার।
তাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ সন্ধিক্ষণের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই,দ্রæততম সময়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণ অর্থাৎ একটি নির্বাচনই কেবল রক্ষা করতে পারে আমাদের প্রিয় বাংলাশেকে। একটি নির্বাচন এখন দেশের অস্তিত্বের সমান্তরাল হয়ে ওঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এখনই এগিয়ে আসতে হবে দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষকে। সরকারকে বলতে চাই, পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে দেখে শিক্ষা নিন। মনে রাখবেন,দেশটা কারো বাপের নয়।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার সবিনয় অনুরোধ, আগে দেশটা বাঁচান। জনগণের ওপর আস্থা রাখুন। পশ্চিমাদের ইশারায় যারা নাচছেন। তারা এখনই থামুন।
আমাদের প্রণাধিক প্রিয় নবী হযরত মোহম্মদ (সাঃ) আলাইহে ওয়া সাল্লামের অবমাননাকারী-রসিকতাকারী ড.ইউনুস কেমন করে ইসলামিষ্টদের লীডার বনে গেলেন?
অথচ মাত্র ক’বছর আগেও তারা তাকে সুদকোর মহাজন বলে বিষোধগার করতেন। পাঠক, আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি অনুসন্ধান করেও জানতে পারিনি যে ড.ইউনুস কোথায় পবিত্র জুম্মার নামায আদায় করেন।
আমি মনে করি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ এতো বড় বিপদের কবলে আর কখনোই পড়েনি। তাই এখানে পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতটি উদ্বৃত করতে চাই। আল্লাযিনা ইযা- আসাবাতহুম মুসিবাহ, কলু-ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি উন।
অর্থাৎ:ধৈর্যশীলরা বিপদে পড়লে বলে, আমরা আল্লাহর। তার কাছ থেকে এসেছি। তার কাছেই ফিরে যাব।
পরিশেষে বলব, হে মহান আল্লাহ, ভন্ড,মুখোশধারী-ধর্মব্যবসায়ী আর ক্ষমতা লোভী পশ্চিমা ক্রীড়নকদের হাত থেকে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে হেফাজত করুন।-আমীন।-লেখক: সাংবাদিক,ঢাকা।

ahabibhme@gmail.com

 

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin