আজ শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
আজ শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ২রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি

পঞ্চদশ শতাব্দীর মন্দিরের স্তম্ভে হাত রাখলেই বেজে ওঠে সপ্তসুর

প্রাচীন স্থাপত্যের পীঠস্থান ভারত বরাবারই বিশ্বের আকর্ষণ। বিশেষত দক্ষিণ ভারতের পাথরের তৈরি প্রাচীন নিদর্শনগুলো প্রাচীন কারিগরদের অসামান্য কারুকার্যের প্রমাণ। এই স্থাপত্যশিল্পরা বহু শতাব্দী ধরে মানুষের মনে বিস্ময় এনেছে। ভারতবর্ষের অন্যতম ধনী সাম্রাজ্য বিজয়নগর রাজ্য অসামান্য স্থাপত্য সৃষ্টির জন্য একসময় পরিচিত ছিল। এই রাজত্বকালেই নির্মিত হয় হাম্পির বিজয়ভিট্টালা মন্দির বা ভিট্টালা মন্দির যা ‘মিউজিকাল পিলারের জন্য বিখ্যাত।
নজরকাড়া কারুকার্যের জন্য সুপরিচিত হাম্পির ভিট্টালা মন্দিরটি প্রাচীন স্থাপত্য। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অন্যতম রাজা দেবার্য ২- এর শাসনকাল পঞ্চদশ শতাব্দীতে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল।রাজবংশের সর্বাধিক বিখ্যাত শাসক কৃষ্ণদেবার্য মন্দিরের অনেক অংশ নতুন করে নির্মাণ করেছিলেন বিজয়নগর।

এই মন্দিরের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, বাদ্য স্তম্ভ বা মিউজিকাল পিলার। হাত দিয়ে হালকা আঘাত দিলেই ভেসে আসে সঙ্গীতের সাত সুর। মোট ৫৬টি স্তম্ভের এক একটি স্তম্ভ থেকে তৈরি হয় এক একটি বাদ্যযন্ত্রের শব্দ। একসময় সারা বিশ্বের পর্যটকরা এই মন্দিরের সৌন্দর্যে এবং সঙ্গীত স্তম্ভগুলো দেখে মুগ্ধ হতেন। তবে আজ তা প্রায় ধ্বংসাবশেষ।

মন্ডপের প্রধান স্তম্ভগুলো বাদ্যযন্ত্রগুলোর পদ্ধতিতে নকশাকৃত। প্রতিটি মূল স্তম্ভ সাতটি ছোট ছোট স্তম্ভ দ্বারা আবৃত। এই ছোটখাট স্তম্ভগুলো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সুর সৃষ্টি করে। এই স্তম্ভগুলোর এমন নির্ম্মাণ সজ্জার কারণ অজানা। স্তম্ভগুলোর ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, পাথর নির্মিত স্তম্ভগুলো কেবল ধাতব আকরিকের উপস্থিতির কারণে নয়, প্রচুর পরিমাণে সিলিকার কারণেও নির্দিষ্ট সুরে অনুরণিত হয়।

মুঘল হানাদাররা দীর্ঘদিন ধরে পাথরের স্তম্ভগুলোকে আগুনে নষ্ট করার চেষ্টা করেন। এই কারণে এর শব্দপ্রাবল্য অনেক কমে গেছে। এছাড়াও ব্রিটিশ আমলে, দুটি স্তম্ভ কেটে পরীক্ষা করা হয়। এই স্তম্ভের ভেতরে কিছু থাকার কারণে শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে কিনা। তবে পরীক্ষা করে দেখা যায় স্তম্ভদুটির ভেতরের অংশ ফাঁপা।

কীভাবে পৌঁছানো যায় হাম্পি?
হাম্পির সবচেয়ে নিকটবর্তী বিমানবন্দর হল বেল্লারী । হাম্পি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৬৪কিমি। নিকটবর্তী প্রধান রেলওয়ে স্টেশন হল হস্পেট জংশন, যা হাম্পি থেকে ১০কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হাম্পি পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ পথ হল সড়ক পথ।

শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Pin on Pinterest
Pinterest
Tweet about this on Twitter
Twitter
Share on LinkedIn
Linkedin